বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা আসার আশঙ্কা নেই : বিজিএমইএ

- আপডেট সময় : ০৩:২১:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩ ২৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা আসার আশঙ্কা নেই বলে আশা করছে বিজিএমইএ। শনিবার তৈরি পোশাক রপ্তানিকারদের এ সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান সংবাদ সম্মেলনে পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সহসভাপতি মো. নাছির উদ্দিন, পরিচালক শোভন ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি জানান, আগামী ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাংলা বর্ণমালায় ‘বাংলাদেশে তৈরি’ লেখাটি পোশাকের গায়ে সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “নকল পণ্য তৈরির অভিযোগ নিয়ে শাস্তির কোনও ইয়ে (সুযোগ) আছে। গত ১২ বছর ধরে ভারতের নাম আসছে, কোনও শাস্তি নেই। এটা আসলে প্রমাণের ব্যাপার আছে।
“তাছাড়া বাংলাদেশ এলডিসি কান্ট্রি হিসেবে এখনও ওয়েভার (ছাড়) পাই। সুতরাং এ মুহূর্তে এরকম কোনও শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও সুযোগই নেই।“ এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নকল পণ্য সরবরাহ করলে কীভাবে শাস্তির মুখোমুখি করা হয় সেই নিয়ম তুলে ধরে বলেন, “প্রথমে কারও নাম আসে। এরপর ওই প্রতিষ্ঠান নিয়ে রিভিউ করা হয়। এরপর নির্দিষ্ট করে প্রমাণ করা সম্ভব হলে তখন কিছু করতে পারে।“
তবে নকল পণ্য দিয়ে রপ্তানি বাজারের সুনাম নষ্ট করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা নকল পণ্য পাঠানোর পক্ষে নই। এ নিয়ে কাজ করছি। বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছি।” সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরে (ইউএসটিআর) বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বাংলাদেশ থেকে নকল পণ্য সরবরাহের অভিযোগ জমা পড়ার পর বিজিএমইএ ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে সদস্য কারখানাগুলোকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করে। পণ্য তৈরির ক্রয়াদেশ নেওয়ার ক্ষেত্রে এর প্রকৃত ব্র্যান্ড মালিকদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয় রপ্তানিকারকদের। এ বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা জানায় সংগঠনটি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ, চীনসহ এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশ থেকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর নামের লোগো হুবহু নকল করে পণ্য তৈরি ও রপ্তানি হচ্ছে বলে সম্প্রতি ইউএসটিআর এর কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে; যারা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ ও কার্যকরের দিকটিও দেখভাল করে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি পোশাক পণ্যের সুবিধা কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। সম্প্রতি ইউএসটিআর থেকে এ বিষয়ে একটি নোটিস বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে জমা পড়ে। সরকারের পক্ষে থেকেও বিষয়টি আমলে নিয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
এরপর বিজিএমইএ নেতারা বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক ও উদ্যোক্তাদের সংগঠনটি একই সঙ্গে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক জ্ঞান ও তথ্য প্রচার, সক্ষমতা বাড়ানোর কর্মসূচি নেওয়ার কথা জানায়।
শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সংগঠনের সভাপতি ফারুক আমেরিকার অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনকে (এএএফএ) নকল পণ্য ঠেকাতে চলমান লেবেলিং এর পরিবর্তে কিউআর কোডের মাধ্যমে ডিজিটাল লেবেলিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানান। “এটি একদিকে যেমন আমাদের পণ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে, অন্যদিকে কাউন্টারফিট পণ্য উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে,” বলেন তিনি।