ঢাকা ১০:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

হিরোইন নয়, অভিনেত্রী হতে এসেছে : টোটা রায় চৌধুরী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৪১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩ ২৬ বার পড়া হয়েছে
নিউজ ফর জাস্টিস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিনোদন ডেস্ক :

একসঙ্গে তাঁরা ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। বুধবার অভিনেত্রীর জন্মদিনে আলিয়া ভট্টকে শুভেচ্ছা জানাতে কলম ধরলেন টোটা রায়চৌধুরী।

আজ ওর সঙ্গে কাটানো নানা মুহূর্তের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। আশা করছি, আজকে ও পরিবারের সঙ্গেই রয়েছে। ওর সঙ্গে ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ আমার হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের দৌলতে এত দিনে সে খবর অনেকেরই জানা। পেশাগত দায়বদ্ধতার কারণেই এই ছবি নিয়ে বেশি কোনও কথা বলায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে জন্মদিনে ব্যক্তি আলিয়াকে নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।

মুম্বইতে ‘রকি অউর রানি’র সেটেই ওর সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ। ও কাজের প্রতি এতটাই সমর্পিত, সেটা দেখে অবাক হয়েছি। এটা শুধু নতুন প্রজন্ম নয়, যে কারও কাছেই অনুপ্রেরণাদায়ক। ওর কাজ দেখে প্রচুর কিছু শিখতে পেরেছি। বড় তারকাদের নিয়ে নানা কথা শোনা যায়।

কিন্তু নিজের চোখে দেখেছি, শুটিং ফ্লোরে এলে আলিয়া কিন্তু ‘স্টারডম’ ভুলে যায়। ঠিক যেন জুতো খোলার মতো স্টুডিয়োর বাইরে সেটাকে ছেড়ে রেখে তার পর ভিতরে প্রবেশ করে। সেখানে আমরা যে প্রত্যেকেই কর্মী এবং একই উদ্দেশ্যের জন্য মিলিত হয়েছি, সেটা ওকে দেখলে বোঝা যায়। সকলের সঙ্গে মিশছে।

আমার ক্লোজ়আপের সময়ে ক্যামেরার পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে কিউ পর্যন্ত দিয়েছে আলিয়া। আবার বাংলা সংলাপ ঠিক বলছে কি না, বা কোনও শব্দের সঠিক উচ্চারণও নির্দ্বিধায় আমার থেকে জেনে নিয়ে রিহার্সাল দিয়েছে। আচ্ছা, ওর কী দরকার! কারণ নামটা আলিয়া ভট্ট। এই বয়সে এমন সাফল্য যে কারও মাথা ঘুরিয়ে দেয়। কিন্তু না, যত ক্ষণ না উচ্চারণ ঠিক হচ্ছে, ও মনে মনে আউড়ে নিয়েছে সংলাপ। সত্যি বলতে, এতটুকু তারকাসুলভ আচরণ ওর মধ্যে দেখিনি।

এমনিতে আলিয়া একটু চুপচাপ। হাসে কম। সেটে থাকলে ওকে দেখলে বোঝা যায় যে, ও কী করতে এসেছে, সেটা জানে। এটা পড়ে আবার ওর সম্পর্কে অনেকেই অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আসলে সেটে এক বার ঢুকলে আলিয়া তখন চরিত্রের মধ্যে থাকে বলেই চুপ করে থাকে। কাজ নিয়ে ভাবে।

আরও একটা বিষয়, আলিয়া এবং রণবীর (সিংহ) দু’জনকেই দেখেছি, সেটে একদম মোবাইল ব্যবহার করে না। সময় পেলেই চিত্রনাট্য ঝালিয়ে নিচ্ছে। সকলেই জানে, কর্ণের হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছে আলিয়া। তাই কর্ণের প্রতি ওর একটা আলাদা রকমের ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা কাজ করে। কর্ণ যেন আলিয়ার বাবা। সেটেও সেটা আমি লক্ষ করেছি।

আমাকে তো অনেকেই শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন বলে জানেন। কিন্তু শুটিংয়ের সময় দেখেছি, আলিয়ার মনের জোর। ইচ্ছে হল আর কিছু একটা খেয়ে নিলাম— এ রকম করবেই না। ডায়েটিশিয়ান যা বলেছেন, তার থেকে এক চুল সরবে না। ডায়েটের প্রতি আলিয়ার নিষ্ঠা যে কোনও অলিম্পিয়ানদের সমতুল্য।

এই ছবিতে আমার শুটিং শেষ হয়েছিল গত বছর জুন-জুলাই মাসে। সেই সময়েই সকলে জানতে পারি যে আলিয়া মা হতে চলেছে। অল্প কিছু কাজ বাকি ছিল। কর্ণ কিন্তু এক কথায় শুটিং পিছিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘যে দিন ও সেটে ফিরবে, সে দিন আবার কাজ শুরু হবে। আমি ওর উপর কোনও রকম জোর দেব না।’’ সম্প্রতি, সেই গানের শুটিংটাই ওরা কাশ্মীরে শেষ করল। কর্ণ তো ছবিও পোস্ট করেছিলেন সমাজমাধ্যমে।

মুম্বইতে প্রথম যে দিন কাজ করতে গিয়েছিলাম, মাথায় ছিল আমি বাংলার প্রতিনিধিত্ব করছি। তাই আমার আচরণই হবে আমার পরিচয়। তাই বরাবরই নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখি। বললে কেউ বিশ্বাস করবে কি না জানি না, আলিয়ার সঙ্গে সেটে একটা ছবি পর্যন্ত আমি তুলিনি। আজ ওর জন্মদিনে দূর মুম্বইতে আমার শুভেচ্ছা ওর কাছে পৌঁছবে কি না, জানি না। তবে শুধু একটাই কথা বলব, আলিয়া কিন্তু বলিউডে ‘হিরোইন’ হতে আসেনি, এসেছে অভিনেত্রী হতে। আমার বিশ্বাস, সময়ের সঙ্গে ও আরও পরিণত হবে। ওকে আমরা আরও শক্তিশালী চরিত্রে দেখতে পাব। ও আমাদের আরও চমকে দেবে।

অনেকের কাছেই আলিয়া কিন্তু পজ়িটিভ রোলমডেল। ওর মতো তারকাদের উপর সারা ক্ষণ সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার নজর। জীবনের প্রতিটা মুহূর্তকে অনুরাগীরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে ব্যস্ত। এই চাপ সামলেও ও কিন্তু নিজের ফোকাস হারায়নি।

এটা ওর থেকে শিক্ষণীয়। আমার তো মনে হয়, আলিয়ার মধ্যে সব সময়েই একটা নির্বাক শক্তি কাজ করে। যেটা সকলের কাছেই প্রেরণাদায়ক। আজ জন্মদিনের এই বিশেষ দিনটা ওর খুব ভাল কাটুক। ও সুস্থ থাকুক, এটুকুই আমার কামনা। ভাল থেকো আলিয়া। ‘রকি অউর রানির প্রচারে আবার তোমার সঙ্গে দেখা হবে। তখন না হয় জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে।

এম.নাসির/১৫

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

হিরোইন নয়, অভিনেত্রী হতে এসেছে : টোটা রায় চৌধুরী

আপডেট সময় : ০৬:৪১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

বিনোদন ডেস্ক :

একসঙ্গে তাঁরা ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। বুধবার অভিনেত্রীর জন্মদিনে আলিয়া ভট্টকে শুভেচ্ছা জানাতে কলম ধরলেন টোটা রায়চৌধুরী।

আজ ওর সঙ্গে কাটানো নানা মুহূর্তের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। আশা করছি, আজকে ও পরিবারের সঙ্গেই রয়েছে। ওর সঙ্গে ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ আমার হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের দৌলতে এত দিনে সে খবর অনেকেরই জানা। পেশাগত দায়বদ্ধতার কারণেই এই ছবি নিয়ে বেশি কোনও কথা বলায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে জন্মদিনে ব্যক্তি আলিয়াকে নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।

মুম্বইতে ‘রকি অউর রানি’র সেটেই ওর সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ। ও কাজের প্রতি এতটাই সমর্পিত, সেটা দেখে অবাক হয়েছি। এটা শুধু নতুন প্রজন্ম নয়, যে কারও কাছেই অনুপ্রেরণাদায়ক। ওর কাজ দেখে প্রচুর কিছু শিখতে পেরেছি। বড় তারকাদের নিয়ে নানা কথা শোনা যায়।

কিন্তু নিজের চোখে দেখেছি, শুটিং ফ্লোরে এলে আলিয়া কিন্তু ‘স্টারডম’ ভুলে যায়। ঠিক যেন জুতো খোলার মতো স্টুডিয়োর বাইরে সেটাকে ছেড়ে রেখে তার পর ভিতরে প্রবেশ করে। সেখানে আমরা যে প্রত্যেকেই কর্মী এবং একই উদ্দেশ্যের জন্য মিলিত হয়েছি, সেটা ওকে দেখলে বোঝা যায়। সকলের সঙ্গে মিশছে।

আমার ক্লোজ়আপের সময়ে ক্যামেরার পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে কিউ পর্যন্ত দিয়েছে আলিয়া। আবার বাংলা সংলাপ ঠিক বলছে কি না, বা কোনও শব্দের সঠিক উচ্চারণও নির্দ্বিধায় আমার থেকে জেনে নিয়ে রিহার্সাল দিয়েছে। আচ্ছা, ওর কী দরকার! কারণ নামটা আলিয়া ভট্ট। এই বয়সে এমন সাফল্য যে কারও মাথা ঘুরিয়ে দেয়। কিন্তু না, যত ক্ষণ না উচ্চারণ ঠিক হচ্ছে, ও মনে মনে আউড়ে নিয়েছে সংলাপ। সত্যি বলতে, এতটুকু তারকাসুলভ আচরণ ওর মধ্যে দেখিনি।

এমনিতে আলিয়া একটু চুপচাপ। হাসে কম। সেটে থাকলে ওকে দেখলে বোঝা যায় যে, ও কী করতে এসেছে, সেটা জানে। এটা পড়ে আবার ওর সম্পর্কে অনেকেই অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আসলে সেটে এক বার ঢুকলে আলিয়া তখন চরিত্রের মধ্যে থাকে বলেই চুপ করে থাকে। কাজ নিয়ে ভাবে।

আরও একটা বিষয়, আলিয়া এবং রণবীর (সিংহ) দু’জনকেই দেখেছি, সেটে একদম মোবাইল ব্যবহার করে না। সময় পেলেই চিত্রনাট্য ঝালিয়ে নিচ্ছে। সকলেই জানে, কর্ণের হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছে আলিয়া। তাই কর্ণের প্রতি ওর একটা আলাদা রকমের ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা কাজ করে। কর্ণ যেন আলিয়ার বাবা। সেটেও সেটা আমি লক্ষ করেছি।

আমাকে তো অনেকেই শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন বলে জানেন। কিন্তু শুটিংয়ের সময় দেখেছি, আলিয়ার মনের জোর। ইচ্ছে হল আর কিছু একটা খেয়ে নিলাম— এ রকম করবেই না। ডায়েটিশিয়ান যা বলেছেন, তার থেকে এক চুল সরবে না। ডায়েটের প্রতি আলিয়ার নিষ্ঠা যে কোনও অলিম্পিয়ানদের সমতুল্য।

এই ছবিতে আমার শুটিং শেষ হয়েছিল গত বছর জুন-জুলাই মাসে। সেই সময়েই সকলে জানতে পারি যে আলিয়া মা হতে চলেছে। অল্প কিছু কাজ বাকি ছিল। কর্ণ কিন্তু এক কথায় শুটিং পিছিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘যে দিন ও সেটে ফিরবে, সে দিন আবার কাজ শুরু হবে। আমি ওর উপর কোনও রকম জোর দেব না।’’ সম্প্রতি, সেই গানের শুটিংটাই ওরা কাশ্মীরে শেষ করল। কর্ণ তো ছবিও পোস্ট করেছিলেন সমাজমাধ্যমে।

মুম্বইতে প্রথম যে দিন কাজ করতে গিয়েছিলাম, মাথায় ছিল আমি বাংলার প্রতিনিধিত্ব করছি। তাই আমার আচরণই হবে আমার পরিচয়। তাই বরাবরই নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখি। বললে কেউ বিশ্বাস করবে কি না জানি না, আলিয়ার সঙ্গে সেটে একটা ছবি পর্যন্ত আমি তুলিনি। আজ ওর জন্মদিনে দূর মুম্বইতে আমার শুভেচ্ছা ওর কাছে পৌঁছবে কি না, জানি না। তবে শুধু একটাই কথা বলব, আলিয়া কিন্তু বলিউডে ‘হিরোইন’ হতে আসেনি, এসেছে অভিনেত্রী হতে। আমার বিশ্বাস, সময়ের সঙ্গে ও আরও পরিণত হবে। ওকে আমরা আরও শক্তিশালী চরিত্রে দেখতে পাব। ও আমাদের আরও চমকে দেবে।

অনেকের কাছেই আলিয়া কিন্তু পজ়িটিভ রোলমডেল। ওর মতো তারকাদের উপর সারা ক্ষণ সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার নজর। জীবনের প্রতিটা মুহূর্তকে অনুরাগীরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে ব্যস্ত। এই চাপ সামলেও ও কিন্তু নিজের ফোকাস হারায়নি।

এটা ওর থেকে শিক্ষণীয়। আমার তো মনে হয়, আলিয়ার মধ্যে সব সময়েই একটা নির্বাক শক্তি কাজ করে। যেটা সকলের কাছেই প্রেরণাদায়ক। আজ জন্মদিনের এই বিশেষ দিনটা ওর খুব ভাল কাটুক। ও সুস্থ থাকুক, এটুকুই আমার কামনা। ভাল থেকো আলিয়া। ‘রকি অউর রানির প্রচারে আবার তোমার সঙ্গে দেখা হবে। তখন না হয় জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে।

এম.নাসির/১৫