ঢাকা ১০:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব: বিদায়ী বিচারপতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:০৪:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩ ২৪ বার পড়া হয়েছে
নিউজ ফর জাস্টিস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:

বিচারালয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারলে তবেই দেশে সঠিক গণতন্ত্র চর্চা ও প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিদায়ী বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান।

তিনি বলেন, সমাজে কোনো কোনো ব্যক্তি বা শ্রেণি এ সত্যকে মেনে না নিয়ে বিচার বিভাগেও বিচারকাজে হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টায় লিপ্ত। যা দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের জন্য বাধা। কোনো কোনো মামলায় বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্নীতি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় সংবিধান অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগে বিচারিক কর্মজীবনের শেষ দিনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান একাত্তরে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ এলাকায় সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের ১৯৮৩ সালে জেলা আদালত এবং ১৯৮৭ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

পরবর্তীকালে ২০০৯ সালের ৩০ জুন হাইকোর্ট বিভাগে অস্থায়ী বিচাপতি হিসেবে নিয়োগ এবং দুই বছর পর স্থায়ী হন। ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর তিনি আপিল বিভাগে নিয়োগ পান। ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তার শেষ কর্মদিবস হবে আগামী ৩০ জুন। কিন্তু তিনি হজে যাওয়ার কারণে ১৫ জুন ছিল তার শেষ কর্মদিবস।

বিদায়ী বিচারপতি নূরুজ্জামান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি স্বাধীনতার জন্য দেশবাসীর সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ প্রত্যক্ষ করেছি, নিজেও সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং আমাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার গুরুত্ব সেই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি নিজেই অনুভব করেছি। বিচার বিভাগে কাজের মাধ্যমে সেই লড়াই চালিয়ে যাওয়া আমার সৌভাগ্যের বিষয়, যেখানে আমি আইনের সামনে ন্যায়, ন্যায্যতা এবং সমতার নীতিগুলোকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করেছি।

ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রচর্চার বিষয়ে এ বিচারপতি বলেন, আমি আমার আইনজীবী ও বিচারিক অভিজ্ঞতা থেকে উপলব্ধি করেছি, বিচারালয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই দেশে সঠিক গণতন্ত্রচর্চা ও প্রতিষ্ঠা সম্ভব। কিন্তু সমাজে কোনো কোনো ব্যক্তি বা শ্ৰেণি এ সত্যকে মেনে না নিয়ে বিচার বিভাগেও বিচারকাজে হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টায় লিপ্ত। যা দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের জন্য বাধা হয়ে ওঠে। তবে এ কথাও সত্য যে, বিচারকদেরও সত্য উপলব্ধি করে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে কাজ করতে হবে।

আইনজীবী সমিতি নিয়ে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মো. নূরুজ্জামান বলেন, সবাই মিলে আইনজীবী সমিতিগুলোর পবিত্রতা রক্ষা করে বিচারাঙ্গনকে আইনচর্চার চারণভূমি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই আইন অঙ্গন ও বিচারালয় শক্তিশালী ও পবিত্র হবে।

তিনি বলেন, বিচারালয়ে আইনজীবীরা যদি যোগ্য ও সৎ হন, তবে বিচারক ও আদালতের কর্মচারী ও কর্মকর্তারা অসৎ থাকতে পারবেন না ।

/আবদুর রহমান খান/

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব: বিদায়ী বিচারপতি

আপডেট সময় : ০৮:০৪:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুন ২০২৩

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:

বিচারালয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারলে তবেই দেশে সঠিক গণতন্ত্র চর্চা ও প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিদায়ী বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান।

তিনি বলেন, সমাজে কোনো কোনো ব্যক্তি বা শ্রেণি এ সত্যকে মেনে না নিয়ে বিচার বিভাগেও বিচারকাজে হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টায় লিপ্ত। যা দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের জন্য বাধা। কোনো কোনো মামলায় বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্নীতি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় সংবিধান অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগে বিচারিক কর্মজীবনের শেষ দিনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান একাত্তরে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ এলাকায় সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের ১৯৮৩ সালে জেলা আদালত এবং ১৯৮৭ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

পরবর্তীকালে ২০০৯ সালের ৩০ জুন হাইকোর্ট বিভাগে অস্থায়ী বিচাপতি হিসেবে নিয়োগ এবং দুই বছর পর স্থায়ী হন। ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর তিনি আপিল বিভাগে নিয়োগ পান। ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তার শেষ কর্মদিবস হবে আগামী ৩০ জুন। কিন্তু তিনি হজে যাওয়ার কারণে ১৫ জুন ছিল তার শেষ কর্মদিবস।

বিদায়ী বিচারপতি নূরুজ্জামান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি স্বাধীনতার জন্য দেশবাসীর সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ প্রত্যক্ষ করেছি, নিজেও সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং আমাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার গুরুত্ব সেই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি নিজেই অনুভব করেছি। বিচার বিভাগে কাজের মাধ্যমে সেই লড়াই চালিয়ে যাওয়া আমার সৌভাগ্যের বিষয়, যেখানে আমি আইনের সামনে ন্যায়, ন্যায্যতা এবং সমতার নীতিগুলোকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করেছি।

ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রচর্চার বিষয়ে এ বিচারপতি বলেন, আমি আমার আইনজীবী ও বিচারিক অভিজ্ঞতা থেকে উপলব্ধি করেছি, বিচারালয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই দেশে সঠিক গণতন্ত্রচর্চা ও প্রতিষ্ঠা সম্ভব। কিন্তু সমাজে কোনো কোনো ব্যক্তি বা শ্ৰেণি এ সত্যকে মেনে না নিয়ে বিচার বিভাগেও বিচারকাজে হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টায় লিপ্ত। যা দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রের জন্য বাধা হয়ে ওঠে। তবে এ কথাও সত্য যে, বিচারকদেরও সত্য উপলব্ধি করে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে কাজ করতে হবে।

আইনজীবী সমিতি নিয়ে আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মো. নূরুজ্জামান বলেন, সবাই মিলে আইনজীবী সমিতিগুলোর পবিত্রতা রক্ষা করে বিচারাঙ্গনকে আইনচর্চার চারণভূমি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই আইন অঙ্গন ও বিচারালয় শক্তিশালী ও পবিত্র হবে।

তিনি বলেন, বিচারালয়ে আইনজীবীরা যদি যোগ্য ও সৎ হন, তবে বিচারক ও আদালতের কর্মচারী ও কর্মকর্তারা অসৎ থাকতে পারবেন না ।

/আবদুর রহমান খান/