ঢাকা ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলের সমালোচনা

ওয়েব শীর্ষ সম্মেলন বর্জন করল মেটা ও গুগল

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৮:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩ ২৯ বার পড়া হয়েছে
নিউজ ফর জাস্টিস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় বার্ষিক আয়োজন ওয়েব শীর্ষ সম্মেলন। কিন্তু এই সম্মেলন বর্জন করেছে বিশ্বের অন্যতম বড় দুটি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মেটা ও গুগল।

গাজায় হামলাকে কেন্দ্র করে সম্মেলনটির আয়োজক গোষ্ঠী ইসরায়েলের সমালোচনা করায় এই প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান দুটি এই সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২০ অক্টোবর) এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে তারা।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ইন্টেল ও জার্মানভিত্তিক সিমেন্সও ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার কথা জানিয়েছে।

এ ছাড়া মার্কিন কৌতুকাভিনেতা অ্যামি পোয়েলার এবং এক্স ফাইলস অভিনেত্রী গিলিয়ান অ্যান্ডারসনও ওই সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

মেটার মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, চলতি বছরের অনুষ্ঠানে তাদের প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রতিনিধি ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না।

অন্যদিকে গুগলের এক মুখপাত্র বলেছেন,‘ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনে আমরা আর উপস্থিত হচ্ছি না।’

আইরিশ উদ্যোক্তা পেডি কসগ্রেভ এই ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনের সহপ্রতিষ্ঠাতা। ১৩ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সরকার ও নেতারা যেসব বাগাড়ম্বর করছেন এবং যে ধরনের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন, তা নিয়ে তিনি মর্মাহত।

কসগ্রেভ লিখেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধকে যুদ্ধাপরাধই বলতে হবে, তা মিত্ররা করলেও। তারা যা, তাদের সে নামেই ডাকতে হবে।’

কসগ্রেভের এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয় বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান। অবশ্য, গত মঙ্গলবার কসগ্রেভ তাঁর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি, যে কথা বলেছি, যে সময়ে বলেছি এবং যেভাবে তা উপস্থাপিত হয়েছে, তাতে অনেকের অনুভূতিতে প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে। আমার কথায় যাঁরা মনে আঘাত পেয়েছেন, তাঁদের কাছে গভীরভাবে ক্ষমা চাইছি। এ সময়ে সহানুভূতি জানানো প্রয়োজন, যা আমি জানাতে পারিনি।’

কসগ্রেভ আরও বলেন, তিনি ইসরায়েলের ওপর হামাসের ‘ভয়াবহ, জঘন্য ও দানবীয়’ হামলার ঘটনায় খোলাখুলি নিন্দা জানাচ্ছেন এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলের ‘টিকে থাকার ও আত্মরক্ষার অধিকারকে’ সমর্থন করছেন।

কসগ্রেভ মনে করেন, ইসরায়েলের উচিত জেনেভা কনভেনশন মানা ও যুদ্ধাপরাধ না করা।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়।

এর পর থেকে গাজায় নারকীয় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪ হাজার ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন।

আহত ১৩ হাজারের বেশি মানুষ। নিহত মানুষের মধ্যে শিশু ১ হাজার ৫২৪, আর নারী ১ হাজারের বেশি।

তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১১ সাংবাদিকও।

এ ছাড়া পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের হামলায় গতকাল ৫ শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন।

আর ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের হামলা ও তাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় তাদের দেশে নিহত মানুষের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে।

আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৬২৯ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬৩ সেনা ও পুলিশ সদস্য।

জাতিসংঘের হিসাব বলছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি বাড়ি। সংখ্যাটি গাজার মোট বাড়ির তিন ভাগের এক ভাগ। এর জেরে উপত্যকাটিতে ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়েছেন।

উল্লেখ্য, আগামী ১৩ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে ওয়েব শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

সেখানে ২ হাজার ৩০০ উদ্যোক্তা এবং প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৭০ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র : এএফপি

এএমএন/২১

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ইসরায়েলের সমালোচনা

ওয়েব শীর্ষ সম্মেলন বর্জন করল মেটা ও গুগল

আপডেট সময় : ০৭:৩৮:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় বার্ষিক আয়োজন ওয়েব শীর্ষ সম্মেলন। কিন্তু এই সম্মেলন বর্জন করেছে বিশ্বের অন্যতম বড় দুটি প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান মেটা ও গুগল।

গাজায় হামলাকে কেন্দ্র করে সম্মেলনটির আয়োজক গোষ্ঠী ইসরায়েলের সমালোচনা করায় এই প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান দুটি এই সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২০ অক্টোবর) এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে তারা।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ইন্টেল ও জার্মানভিত্তিক সিমেন্সও ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার কথা জানিয়েছে।

এ ছাড়া মার্কিন কৌতুকাভিনেতা অ্যামি পোয়েলার এবং এক্স ফাইলস অভিনেত্রী গিলিয়ান অ্যান্ডারসনও ওই সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

মেটার মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, চলতি বছরের অনুষ্ঠানে তাদের প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রতিনিধি ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না।

অন্যদিকে গুগলের এক মুখপাত্র বলেছেন,‘ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনে আমরা আর উপস্থিত হচ্ছি না।’

আইরিশ উদ্যোক্তা পেডি কসগ্রেভ এই ওয়েব শীর্ষ সম্মেলনের সহপ্রতিষ্ঠাতা। ১৩ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সরকার ও নেতারা যেসব বাগাড়ম্বর করছেন এবং যে ধরনের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন, তা নিয়ে তিনি মর্মাহত।

কসগ্রেভ লিখেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধকে যুদ্ধাপরাধই বলতে হবে, তা মিত্ররা করলেও। তারা যা, তাদের সে নামেই ডাকতে হবে।’

কসগ্রেভের এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয় বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান। অবশ্য, গত মঙ্গলবার কসগ্রেভ তাঁর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি, যে কথা বলেছি, যে সময়ে বলেছি এবং যেভাবে তা উপস্থাপিত হয়েছে, তাতে অনেকের অনুভূতিতে প্রচণ্ড আঘাত লেগেছে। আমার কথায় যাঁরা মনে আঘাত পেয়েছেন, তাঁদের কাছে গভীরভাবে ক্ষমা চাইছি। এ সময়ে সহানুভূতি জানানো প্রয়োজন, যা আমি জানাতে পারিনি।’

কসগ্রেভ আরও বলেন, তিনি ইসরায়েলের ওপর হামাসের ‘ভয়াবহ, জঘন্য ও দানবীয়’ হামলার ঘটনায় খোলাখুলি নিন্দা জানাচ্ছেন এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলের ‘টিকে থাকার ও আত্মরক্ষার অধিকারকে’ সমর্থন করছেন।

কসগ্রেভ মনে করেন, ইসরায়েলের উচিত জেনেভা কনভেনশন মানা ও যুদ্ধাপরাধ না করা।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়।

এর পর থেকে গাজায় নারকীয় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় ৪ হাজার ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন।

আহত ১৩ হাজারের বেশি মানুষ। নিহত মানুষের মধ্যে শিশু ১ হাজার ৫২৪, আর নারী ১ হাজারের বেশি।

তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১১ সাংবাদিকও।

এ ছাড়া পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের হামলায় গতকাল ৫ শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন।

আর ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের হামলা ও তাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় তাদের দেশে নিহত মানুষের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে।

আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৬২৯ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬৩ সেনা ও পুলিশ সদস্য।

জাতিসংঘের হিসাব বলছে, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি বাড়ি। সংখ্যাটি গাজার মোট বাড়ির তিন ভাগের এক ভাগ। এর জেরে উপত্যকাটিতে ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়েছেন।

উল্লেখ্য, আগামী ১৩ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে ওয়েব শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

সেখানে ২ হাজার ৩০০ উদ্যোক্তা এবং প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৭০ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্র : এএফপি

এএমএন/২১