ঢাকা ১০:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন

সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে প্রাণহানি ২৪,৯৫৪ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০২:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩ ২৪ বার পড়া হয়েছে
নিউজ ফর জাস্টিস অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে প্রাণ হারাচ্ছেন ২৪ হাজার ৯৫৪ জন মানুষ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে সংস্থাটি আরও বলেছে, বাংলাদেশে বছরে

সড়ক দুর্ঘটনাজনিত জিডিপির ক্ষতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে

এসব কথা জানায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এক নেতা বলেন, সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার থাকলেও সড়ক নিরাপত্তায়

দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম নেই। দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে

রোড সেফটি ইউনিট গঠিত হলেও মূলত গণমাধ্যমে কথা বলা ছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তাদের কোনো গবেষণা কার্যক্রম নেই।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রনালয়ে নানান ইউনিট ও প্রতি বছর ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ থাকলেও

সড়ক দুর্ঘটনা থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষায় কোনো বাজেট নেই।

তিনি বলেন, এ মন্ত্রণালয়ে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কোনো গবেষক নেই, গবেষণা নেই, কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই।

ফলে প্রতি বছর সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছেই।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮ হাজার মানুষের প্রাণহানির তথ্য মিলেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি, সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে প্রাণহানি ২৪৯৫৪ জনের

সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সড়কে প্রতিদিন ৬৪ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটছে।

এ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ৩৬০ জন মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে।

প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ আহত হচ্ছেন। প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ছে। এরমধ্যে ১২ হাজারের বেশি ১৭ বছরের কম বয়সী শিশু। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছে কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়।

অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে মারা যায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন। সংস্থাটির তথ্য মতে, হতাহতদের ৬৭ শতাংশই ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী। এক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি।

বুয়েটের এআরআই-এর হিসাব বলছে, গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় এমন ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা যদি নির্ভরশীল মানুষের তুলনায় বেশি হয়, তাহলে সেটিকে জনসংখ্যা বোনাস বা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলা হয়। বাংলাদেশ এ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের জন্য গর্ব করে। সড়ক দুর্ঘটনা এ গর্বের জায়গাতেই বেশি আঘাত হানছে।

পুলিশের তথ্যভান্ডার বিশ্লেষণ করে এআরআই বলছে, গত এক দশকে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের সাড়ে ১৮ শতাংশ শিশু। এদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাব মতে নিহতদের ৫১ শতাংশ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এ নেতা বলেন, দেশের কর্মক্ষম ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন। এর প্রভাব পড়ছে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তি এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক ক্ষতি হচ্ছে।

এএমএন/২১

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন

সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে প্রাণহানি ২৪,৯৫৪ জনের

আপডেট সময় : ০২:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩

সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে প্রাণ হারাচ্ছেন ২৪ হাজার ৯৫৪ জন মানুষ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে সংস্থাটি আরও বলেছে, বাংলাদেশে বছরে

সড়ক দুর্ঘটনাজনিত জিডিপির ক্ষতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে

এসব কথা জানায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এক নেতা বলেন, সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার থাকলেও সড়ক নিরাপত্তায়

দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম নেই। দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে

রোড সেফটি ইউনিট গঠিত হলেও মূলত গণমাধ্যমে কথা বলা ছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তাদের কোনো গবেষণা কার্যক্রম নেই।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রনালয়ে নানান ইউনিট ও প্রতি বছর ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ থাকলেও

সড়ক দুর্ঘটনা থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষায় কোনো বাজেট নেই।

তিনি বলেন, এ মন্ত্রণালয়ে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কোনো গবেষক নেই, গবেষণা নেই, কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই।

ফলে প্রতি বছর সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছেই।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮ হাজার মানুষের প্রাণহানির তথ্য মিলেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি, সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে প্রাণহানি ২৪৯৫৪ জনের

সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সড়কে প্রতিদিন ৬৪ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটছে।

এ তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ৩৬০ জন মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে।

প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ আহত হচ্ছেন। প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ছে। এরমধ্যে ১২ হাজারের বেশি ১৭ বছরের কম বয়সী শিশু। এ হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছে কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়।

অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে মারা যায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন। সংস্থাটির তথ্য মতে, হতাহতদের ৬৭ শতাংশই ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী। এক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি।

বুয়েটের এআরআই-এর হিসাব বলছে, গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় এমন ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা যদি নির্ভরশীল মানুষের তুলনায় বেশি হয়, তাহলে সেটিকে জনসংখ্যা বোনাস বা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলা হয়। বাংলাদেশ এ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের জন্য গর্ব করে। সড়ক দুর্ঘটনা এ গর্বের জায়গাতেই বেশি আঘাত হানছে।

পুলিশের তথ্যভান্ডার বিশ্লেষণ করে এআরআই বলছে, গত এক দশকে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের সাড়ে ১৮ শতাংশ শিশু। এদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাব মতে নিহতদের ৫১ শতাংশ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এ নেতা বলেন, দেশের কর্মক্ষম ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন। এর প্রভাব পড়ছে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তি এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক ক্ষতি হচ্ছে।

এএমএন/২১